সাদ সাহেবের ব্যাপারে দারুল উলূম দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিমের আবারো স্পষ্ট ঘোষণা-
"রুজুর পরও মাওলানা সাদ পূর্বের মতো গুমরাহ বয়ান ধারাবাহিকভাবে দিয়ে যাচ্ছেন।
কাজেই দারুল উলূম দেওবন্দের পক্ষ থেকে তাকে কোনোভাবেই ক্লিন সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব নয়।"
...................................
দারুল উলূম দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আবদুল খালেক মাদরাজি তাবলীগ জামাতের একাংশের নেতা মাওলানা সাদ কান্ধলভি সম্পর্কে বলেছেন, দারুল উলূম দেওবন্দ তার পূর্বের অবস্থানের ওপর অবিচল।
নায়েবে মুহতামিম তার সংলাপে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে, দারুল উলূম দেওবন্দ পূর্বের ফতোয়ার ওপর এখনো অবিচল-অনড়। দারুল উলূম দেওবন্দ মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে কোনো ধরনের ক্লিন সার্টিফিকেট দেবে না।
.
মাওলানা আবদুল খালিক সাহেবের সেই অডিও ক্লিপ এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যেখানে তিনি পরিষ্কার বলেছেন, তারা মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে কোনো ধরনের ক্লিন সনদপত্র দেবে না।
কিছু লোকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তিনি (মাওলানা সাদ) তার বিভিন্ন বয়ানের মাঝে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম সম্পর্কে ধৃষ্টতামূলক কথা বলে থাকেন। যা কিছুতেই সহনীয় নয়। এ কারণেই দারুল উলূম দেওবন্দ তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ ছাড়াও তার ভেতরে আরো অনেক মন্দ ও কলুষিত বিষয় রয়েছে। যার কারণে তাবলীগ জামাতের শূরার সদস্যগণ সেই সব উদ্ভূত সমস্যাবলীর কারণে ভীষণ মনোক্ষুণ্ন। তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
.
মাওলানা মাদরাজি বলেন, দারুল উলূম দেওবন্দের পক্ষ থেকে মাওলানা সাদ সাহেবকে শুধু এ কথা বলা হয়েছিল যে, ‘তিনি যেন তার সকল বয়ানের মাঝে বিশুদ্ধ দলিল উপস্থাপন করেন এবং নবি-রাসূলদের ঘটনাবলি সঠিক পদ্ধতিতে আলোচনা করেন।’
সাদ সাহেবের রুজু সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, এর উত্তরে মাওলানা মাদরাজি বলেন, ‘রুজুর পরও মাওলানা সাদ পূর্বের মতো গুমরাহ বয়ান ধারাবাহিকভাবে দিয়ে যাচ্ছেন। কাজেই এখন আর তাকে দোষমুক্ত জানিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। দারুল উলূম দেওবন্দের পক্ষ থেকে তাকে কোনোভাবেই ক্লিন সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব নয়। দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়া শতভাগ সঠিক। সেই ফতোয়ার ওপর দেওবন্দ এখনো অনড়-অবিচল।
তিনি আরো বলেন, সাদ সাহেব যেহেতু রুজুর পরও তার পূর্বের গুমরাহ বয়ান চালিয়ে যাচ্ছেন, এজন্যে দারুল উলূম দেওবন্দ নিজ অবস্থানের ওপর শতভাগ অবিচল, অনড় ও প্রতিষ্ঠিত।
.
মাওলানা মাদরাজি বলেন, মাওলানা সাদ সাহেবের অসংখ্য গুমরাহ বয়ান ও তাবলীগের শূরাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা অস্বীকার করার কারণে দারুল উলূম দেওবন্দ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা কাউকে যেমন এ কথা বলি না যে, আপনারা তার কাছে যান। তদ্রূপ কাউকে নিষেধও করি না। তিনি বলেন, ‘মূর্খদের গোষ্ঠী যত বিচ্ছিন্ন ফেরকা গঠন করুক, তাদের সার্বিক কার্যকলাপ আমাদের সামনে স্পষ্ট।
.
মাওলানা মাদরাজির সেই সংলাপে সদ্যসমাপ্ত আজমগড় ইজতিমা সম্পর্কেও আলোচনা রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে যে, এই অডিও সংলাপটি চার দিন আগে ধারণ করা হয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড থেকে কিছু লোক তাবলীগ জামাত ও দারুল উলূম দেওবন্দের পারস্পরিক কিছু মতভেদপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অনুসন্ধান করার উদ্দেশ্যে দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম সাহেবের শরণাপন্ন হয়। মুহতামিম সাহেবের অনুপস্থিতিতে মাওলানা আবদুল খালেক মাদরাজি সাহেব সেই প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। অডিও ক্লিপটি ২৯ অক্টোবর সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
প্রসঙ্গত জ্ঞাতব্য যে, দারুল উলূম দেওবন্দের পক্ষ থেকে মাওলানা সাদ কান্ধলভি সম্পর্কে সকল শীর্ষস্থানীয় শিক্ষকমণ্ডলীর স্বাক্ষর সহকারে একাধিক পাতা সম্বলিত ফতোয়া দারুল উলূম দেওবন্দের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছিল। যা নিয়ে বর্তমানে তুমুল বাদানুবাদ চলছে। এরপর মাওলানা সাদ সাহেবের তরফ থেকে রুজুর অনেকগুলো সংবাদও নানা সময় উড়ে এসেছে। (29 October 2018)